পুরুষ(Person)
বচন(Number)
১.ইংরাজী ও বাংলায় বচন দুটি-একবচন এবং দ্বিবচন। কিন্তু সংস্কৃতে বচন তিনটি-
(ক) একবচন (Singular).
(খ) দ্বিবচন (Dual) .
(গ) বহুবচন (Plural).
সুতরাং ইংরাজী ভাষায় দুটি সংখ্যা বোঝাতে বহুবচন ব্যবহার করা হলেও সংস্কৃতে অনুবাদ করার সময় দ্বিবচনের পদ দিতে হয়। উদাহরণ যথা- An elephant-গজঃ, Two elephants-গজৌ, Elephants-গজাঃ।
২. দ্বয়, দ্বিতয়, যুগল, মিথুন, যুগ্ম, দ্বন্দ্ব প্রভৃতি শব্দ দুই সংখ্যাবোধক; ত্রয়, ত্রিতয় শব্দ তিন সংখ্যাবোধক; চতুষ্টয় শব্দ চার সংখ্যাবোধক এবং গণ, মণ্ডল, সমূহ, বর্গ, কুল প্রভৃতি শব্দ বহুত্ববোধক হলেও এগুলি প্রায়ই একবচনে ব্যবহৃত হয়। যথা-পুস্তকদ্বয়ম্, বৎসরদ্বিতয়ম্, বৃক্ষযুগলম্, বিহগমিথুনম্, বিহগযুগ্মম্, মন্ত্রদ্বন্দ্বম্, পুস্তকত্রয়ম্, বৎসরত্রয়ম্, পুস্তকচতুষ্টয়ম্, মিত্রগণঃ, মুনিমণ্ডলম্, বন্ধুসমূহঃ, বন্ধুবর্গঃ, গুরুকুলম্ ইত্যাদি।
কিন্তু পৃথক্ পৃথক্ অনেকগুলি দল বোঝালে যুগল, মিথুন, যুগ্ম, দ্বন্দ্ব, গণ, মণ্ডল প্রভৃতি শব্দের বহুবচন হতে পারে। যেমন- বিহগযুগলানি-Many Couples of birds, মৃগমিথুনানি বা মৃগদ্বন্দ্বানি-Many couples of deer, মুনিগণাঃ- Many groups of Sages ইত্যাদি।
৩) পুংলিঙ্গে দার(স্ত্রী), অক্ষত (আতপ চাল), লাজ (খই), অসু (প্রাণ), প্রাণ (জীবন)-"লাজাক্ষতদারাসূনাং বহুত্বঞ্চ"(কিন্তু প্রাণ-শব্দ বায়ুবিশেষ বোঝালে তিন বচনেই প্রযুক্ত হয়) এবং স্ত্রীলিঙ্গে অপ্ (জল), সুমনস্ (পুষ্প), সমা (বৎসর), সিকতা (বালুকা বা বালুকাময় ভূমি) ও বর্ষা-"অপ্-সুমনস্-সমা-সিকতা-বর্ষাণাং বহুত্বঞ্চ"-এই শব্দগুলি সর্বদা বহুবচনে ব্যবহৃত হয়।
সুমনস্-শব্দ বহুবচনে ব্যবহৃত হলেও একবচনেও প্রয়োগ দেখা যায়। সুমনস্-শব্দ পুষ্প-অর্থে নিত্য বহুবচনান্ত, কিন্তু পণ্ডিত-অর্থে একবচনান্ত হয়।
অপ্সরস্-শব্দ সাধারণতঃ বহুবচনান্ত, কিন্তু একবচনেও ব্যবহৃত হয়, যথা- 'অস্তি মেনকেতি কাচিৎ অপ্সরাঃ'।
৪) গৌরব (আদর বা সম্মান) বোঝালে অনেক স্থলে একবচনের পরিবর্তে বহুবচন ব্যবহৃত হয়। যেমন-স্নেহভাজনেষু, অভিন্নহৃদয়েষু, হৃদয়হারিষু, শ্রীচরণকমলেষু প্রভৃতি।
৫) প্রদেশবাচক শব্দসকল প্রায়ই বহুবচনে ব্যবহৃত হয়। যথা-বঙ্গেষু, উৎকলেষু, বিদর্ভেষু ইত্যাদি। কিন্তু প্রদেশবাচক শব্দসকলের সহিত দেশ, বিষয় প্রভৃতি শব্দের সমাস হলে সর্বদা একবচন হয়, যেমন-বঙ্গদেশে, উৎকলদেশে ইত্যাদি।
৬) গৃহ-শব্দ ক্লীবলিঙ্গেই ব্যবহৃত হয়, যথা-গৃহম্, গৃহে, গৃহাণি প্রভৃতি। কিন্তু গৃহ-শব্দ পুংলিঙ্গ হলে নিত্য বহুবচনান্ত হয়। যথা- ইমে তস্য গৃহাঃ।
লিঙ্গ(Gender)
পুংলিঙ্গ(Masculine)
সংস্কৃত ভাষায় শব্দের অর্থ দেখে লিঙ্গ নির্ণয় করা যায় না। দার, ভার্যা ও কলত্র-এই তিনটি শব্দেরই অর্থ যদিও স্ত্রী, তবুও সংস্কৃতে 'দার' পুংলিঙ্গ, 'ভার্যা' স্ত্রীলিঙ্গ ও 'কলত্র' ক্লীবলিঙ্গ শব্দ।
নীচে কোন্ শব্দের কী লিঙ্গ হয়-তা মনে রাখার জন্য কতকগুলি নিয়ম দেওয়া হল-
(১) ঘঞলৌ পুংসি- ঘঞ্ ও অল্ -প্রত্যয়ান্ত শব্দসকল পুংলিঙ্গ। যথা, ঘঞ্-প্রত্যয়ান্ত-পাঠঃ (পঠ্+ঘঞ্), পাতঃ, বাসঃ, লাভঃ, নাশঃ, কামঃ, শোকঃ, ভোগঃ, রোগঃ, যোগঃ, পাকঃ, ত্যাগঃ, ভাগঃ, যাগঃ, হারঃ, রাগঃ, সঙ্গঃ, ভঙ্গঃ প্রভৃতি।
অল্ বা অচ্-প্রত্যয়ান্ত- জয়(জি+অচ্), ক্ষয়ঃ, চয়ঃ, লয়ঃ, নয়ঃ, রবঃ, স্তবঃ, ভবঃ, খেদঃ, ভেদঃ, ক্লেশঃ, শ্লেষঃ, কোপঃ, তোষঃ, বোধঃ, রোষঃ, মোহঃ, দ্রোহঃ, ক্রোধঃ,লোভঃ, ক্ষোভঃ,স্পর্শঃ, হর্ষঃ, জপঃ, মদঃ, গ্রহঃ, বিজয়ঃ, বিনয়ঃ, বিস্ময়ঃ, আশ্রমঃ, আশ্রয়ঃ, পরামর্শঃ ইত্যাদি।
অল্ বা অচ্ প্রত্যয়ান্ত হলেও ভয়, মুখ, বর্ষ, পদ-এই শব্দগুলি ক্লীবলিঙ্গ হয়। এদের মধ্যে বর্ষ-শব্দ পুংলিঙ্গও হয়।
(২) ক্যন্তঃ(কি+অন্তঃ)- কি-প্রত্যয়ান্ত শব্দসকল পুংলিঙ্গ। যথা-বিধিঃ (বি+ধা+কি), নিধিঃ, আধিঃ, সন্ধিঃ, জলধিঃ, বারিধিঃ, পয়োধিঃ, উদধিঃ ইত্যাদি।
(৩) নঙন্তঃ(নঙ্+অন্তঃ)- নঙ্-প্রত্যয়ান্ত শব্দসকল পুংলিঙ্গ। যথা-প্রশ্নঃ(প্রচ্ছ+নঙ্), স্বপ্নঃ, যজ্ঞঃ, যত্নঃ ইত্যাদি।
(৪) নন্তঃ(ন্+অন্তঃ)- ন্-ভাগান্ত শব্দসকল পুংলিঙ্গ। যেমন-গুণিন্-গুণী, রাজন্-রাজা, শ্বন্-শ্বা, যুবন্-যুবা, উক্ষন্-উক্ষা, মহিমন্-মহিমা, গরিমন্-গরিমা, লঘিমন্-লঘিমা (প্রেমন্-শব্দ পুংলিঙ্গ ও ক্লীবলিঙ্গে ব্যবহৃত হয়) প্রভৃতি।
(৫) দারাক্ষতলাজাসূনাং বহুত্বঞ্চ- দার, অক্ষত, লাজ ও অসু শব্দ পুংলিঙ্গ এবং এরা সবসময় বহুবচনেই প্রযুক্ত হয়।
(৬) ণাথুচ্(ণ+অথুচ্)- ণ, অথুচ্(অথু)-প্রত্যয়ান্ত শব্দসকল পুংলিঙ্গ হয়, যথা- ব্যাধঃ(ব্যধ+ণ), বেপথুঃ(বেপ+অথুচ্) প্রভৃতি।
(৭) রাত্রাহ্নাহাঃ পুংসি- সমাস করলে যে সব শব্দের শেষে রাত্র, অহ্ন বা অহ থাকে, তারা পুংলিঙ্গ, যথা-সর্বরাত্রঃ, পূর্বরাত্রঃ, মধ্যরাত্রঃ (কিন্তু রাত্রি শব্দের পূর্বে সংখ্যাবাচক শব্দ থাকলে ক্লীবলিঙ্গ হয়, যথা-দ্বিরাত্রম্, ত্রিরাত্রম্, পঞ্চরাত্রম্, সপ্তরাত্রম্, নবরাত্রম্ প্রভৃতি), পূর্বাহ্ণঃ, মধ্যাহ্নঃ, অপরাহ্ণঃ, সায়াহ্নঃ, পরমাহঃ, শুভাহঃ, একাহঃ ইত্যাদি (কিন্তু পুণ্যাহম্ (পবিত্র দিন) শব্দটি ক্লীবলিঙ্গ)।
(৮) মিত্র-শব্দ সূর্য অর্থে পুংলিঙ্গ, কিন্তু বন্ধু অর্থে ক্লীবলিঙ্গ হয়।
(৯) এছাড়াও নিম্নলিখিত শব্দগুলি পুংলিঙ্গ হয়, যথা- বিদ্যালয়ঃ, মহাবিদ্যালয়ঃ, বিশ্ববিদ্যালয়ঃ, ঘটঃ, পটঃ, ধূপঃ, দীপঃ, রথঃ, অর্থঃ, সময়ঃ, কালঃ, রসঃ, বায়সঃ, বাসরঃ, দোষঃ, গুণঃ, পাষাণঃ, কুম্ভঃ, বৃষভঃ, দ্বাপরঃ, ক্ষুরঃ, মেরুঃ, তরুঃ, শত্রুঃ, সেতুঃ, হেতুঃ, কেতুঃ, স্বর্গঃ, যাগঃ, অদ্রিঃ, মেঘঃ, অব্ধিঃ, অসিঃ, শরঃ, অরিঃ, করঃ, গণ্ডঃ, ওষ্ঠঃ, দন্তঃ, কেশঃ, নখঃ, মাসঃ, ঋতুঃ, রসঃ, বর্ণঃ, অগ্নিঃ, শব্দঃ, বায়ুঃ, নরঃ, অহিঃ, ব্রহ্মা, বিষ্ণুঃ, কার্তিকেয়ঃ, বিনায়কঃ, শিবঃ, রুদ্রঃ, মহাকালঃ, সাগরঃ, সমুদ্রঃ, পর্বতঃ, খড়গঃ, রিপুঃ, কণ্ঠঃ, গলঃ, রশ্মিঃ, কিরণঃ, বৃক্ষঃ, গ্রীষ্মঃ, হেমন্তঃ, বসন্তঃ, কটুঃ, তিক্তঃ, কষায়ঃ, মধুরঃ, অম্লঃ, লবণঃ, শুক্লঃ, কৃষ্ণঃ, শ্যামঃ, ধূসরঃ, পবনঃ, সমীরঃ, সমীরণঃ, বাতঃ, অনিলঃ, মারুতঃ প্রভৃতি।
স্ত্রীলিঙ্গ(Feminine)
১) ক্তিন্নন্তঃ (ক্তিন্+অন্তঃ)- ক্তিন্-প্রত্যয়ান্ত শব্দসকল স্ত্রীলিঙ্গ হয়, যথা- নীতিঃ(নী+ক্তিন্), শ্রুতিঃ, গতিঃ, ভক্তিঃ, কৃতিঃ, শক্তিঃ, দীপ্তিঃ, মতিঃ (জ্ঞাতি-শব্দ ক্তিন্-প্রত্যয়ান্ত হলেও পুংলিঙ্গ হয়) প্রভৃতি।
২) টাপ্, ডাপ্, চাপ্ (আপ্), ঙীপ্, ঙীষ্, ঙীন্ (ঈপ্) ও ঊঙ্-প্রত্যয়ান্ত শব্দসকল স্ত্রীলিঙ্গ, যেমন-শোভা, অজা, দীনা, স্থিরা, দেবী, গৌরী, নদী, সিংহী, সুন্দরী, বধূঃ, শ্বশ্রূঃ প্রভৃতি।
৩) তলন্তঃ(তল্+অন্তঃ)- তল্(তা)-প্রত্যয়ান্ত শব্দসকল স্ত্রীলিঙ্গ, যথা-লঘুতা, পটুতা, মৃদুতা, দেবতা, সাধুতা, হীনতা, জনতা ইত্যাদি।
৪) ঊনবিংশতি(১৯) থেকে নবনবতি(৯৯) পর্যন্ত সংখ্যাবাচক শব্দগুলি স্ত্রীলিঙ্গ হয় এবং প্রায়ই একবচনরূপে ব্যবহৃত হয়। যথা- ঊনবিংশতিঃ, বিংশতিঃ, ত্রিংশৎ, চত্বারিংশৎ, পঞ্চাশৎ, ষষ্টিঃ, সপ্ততিঃ, অশীতিঃ, নবতিঃ, নবনবতিঃ ইত্যাদি।
৫) তিথিবাচক শব্দসকল স্ত্রীলিঙ্গ। যেমন- প্রতিপৎ, দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী, একাদশী, দ্বাদশী, ত্রয়োদশী, চতুর্দশী, পূর্ণিমা, অমাবস্যা।
৬) অকারান্ত সমাহার-দ্বিগু সমাস নিষ্পন্ন শব্দসমূহ স্ত্রীলিঙ্গ হয়। যথা-ত্রিলোকী, চতুষ্পদী, চতুষ্পাঠী, পঞ্চবটী, সপ্তশতী, দশরথী (কিন্তু পাত্র, যুগ, ভুবন-শব্দ পরপদ হলে ক্লীবলিঙ্গ হয়, যথা-পঞ্চপাত্রম্, চতুর্যুগম্, ত্রিভুবনম্) প্রভৃতি।
৭) নিত্য বহুবচনান্ত অপ্, সুমনস্, সমা, সিকতা, বর্ষা-শব্দসমূহ স্ত্রীলিঙ্গ হয়।
৮) এছাড়াও ভূমিঃ, গ্লানিঃ, হানিঃ, বিদ্যুৎ, তড়িৎ, নিশা, ক্ষণপ্রভা, সৌদামিনী, রজনী, রাত্রিঃ, শর্বরী, বিভাবরী, ব্রততী, লতা, দিক্, আশা, ধরা, বসুন্ধরা, বসুধা, সর্বংসহা, অবনী, মেদিনী, পৃথিবী, মহী, ক্ষিতিঃ, স্রোতস্বিনী, লজ্জা, ব্রীড়া, ত্রপা, আশীঃ(আশীর্বাদঃ), ধূঃ(ভার, বোঝা), পূঃ(নগর), গীঃ(বক্তৃতা), দ্বাঃ(দ্বার) শব্দগুলি স্ত্রীলিঙ্গ হয়।
ক্লীবলিঙ্গ(Neuter)
(১) ভাবে ল্যুডন্তঃ(ল্যুট্+অন্তঃ)- ভাববাচ্যে নিষ্পন্ন ল্যুট্(অনট্)-প্রত্যয়ান্ত শব্দসকল ক্লীবলিঙ্গ। যথা- ভোজনম্ (ভুজ্+ল্যুট্(অনট্)), গমনম্, দর্শনম্, শ্রবণম্, রোদনম্, শয়নম্, ভ্রমণম্ প্রভৃতি।
(২) নপুংসকে ভাবে ক্তঃ- সর্বপ্রকার কালে ভাববাচ্যে ধাতুর পর ক্ত-প্রত্যয় হয় এবং সেই ক্ত-প্রত্যয়ান্ত শব্দ ক্লীবলিঙ্গ হয়। যথা- শিশোঃ শয়িতম্(শী+ক্ত), বালকস্য হসিতম্, তেন কৃতম্, জাতম্, ভুক্তম্, গীতম্, গতম্, জীবিতম্ প্রভৃতি।
(৩) শতাদিঃ ক্লীবে- শত প্রভৃতি সংখ্যাবাচক শব্দগুলি ক্লীবলিঙ্গ। যথা-শতম্, সহস্রম্, অযুতম্, লক্ষম্, নিযুতম্ ইত্যাদি।
(৪) অসন্তো দ্ব্যচ্কঃ(অস্+অন্তঃ দ্বি+অচ্কঃ)- দুই স্বরবিশিষ্ট অস্-ভাগান্ত শব্দ ক্লীবলিঙ্গ হয়। যথা-পয়স্-পয়ঃ, মনস্-মনঃ, চেতস্-চেতঃ, নভস্-নভঃ, তেজস্-তেজঃ, তমস্-তমঃ, শিরস্-শিরঃ, যশস্-যশঃ, বয়স্-বয়ঃ, বাসস্-বাসঃ (কিন্তু বেধস্-বেধাঃ শব্দ পুংলিঙ্গ) ইত্যাদি।
দুইয়ের বেশি স্বরযুক্ত হলে পুংলিঙ্গ হয়, যথা- চন্দ্রমস্-চন্দ্রমাঃ, সুমেধস্-সুমেধাঃ, পুরোধস্-পুরোধাঃ প্রভৃতি।
(৫) ইসুসন্তঃ(ইস্+উস্+অন্তঃ)- ইস্ ও উস্-ভাগান্ত শব্দ ক্লীবলিঙ্গ, যথা- হবিস্-হবিঃ, সর্পিস্-সর্পিঃ, জ্যোতিস্-জ্যোতিঃ, বপুস্-বপুঃ, ধনুস্-ধনুঃ, যজুস্-যজুঃ, আয়ুস্-আয়ুঃ ইত্যাদি।
(৬) মনিন্ দ্ব্যচ্কঃ(দ্বি+অচ্কঃ)- দুই স্বরবিশিষ্ট মনিন্(অন্)-প্রত্যয়ান্ত শব্দ ক্লীবলিঙ্গ, যথা-কর্মন্-কর্ম, নর্মন্-নর্ম, চর্মন্-চর্ম, ভস্মন্-ভস্ম, জন্মন্-জন্ম, বেশ্মন্-বেশ্ম, বর্ত্মন্-বর্ত্ম, বর্মন্-বর্ম, শর্মন্-শর্ম (ব্রহ্মন্-শব্দ সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা অর্থে পুংলিঙ্গ এবং নির্গুণ পরমাত্মা অর্থে ক্লীবলিঙ্গ হয়) প্রভৃতি।
দুইয়ের বেশি স্বরযুক্ত হলে পুংলিঙ্গ হয়, যথা- দেবশর্মন্-দেবশর্মা, তাত্রীবর্মন্-তাত্রীবর্মা ইত্যাদি।
(৭) ইত্রং নপুংসকে- ইত্র-প্রত্যয়ান্ত শব্দসকল ক্লীবলিঙ্গ, যথা- পবিত্রম্(পূ+ইত্র), চরিত্রম্, খনিত্রম্ ইত্য়াদি।
(৮) ভাব অর্থে অকারান্ত তদ্ধিত-প্রত্যয়(অণ্, ষ্যঞ্, ত্ব) নিষ্পন্ন শব্দসকল ক্লীবলিঙ্গ, যথা-অণ্-লাঘবম্(লঘু+অণ্), গৌরবম্, যৌবনম্; ষ্যঞ্- তারুণ্যম্(তরুণ+ষ্যঞ্), আলস্যম্, স্বাস্থ্যম্, বাল্যম্, ধৈর্য্যম্, সৌন্দর্যম্; ত্ব-বন্ধুত্বম্, মৃদুত্বম্, চারুত্বম্ ইত্যাদি।
(৯) পুষ্প ও ফল বোঝালে বৃক্ষবাচক শব্দগুলি ক্লীবলিঙ্গ হয়, যথা-আম্রম্-আম ফল, পনসম্-কাঁঠাল ফল, নারিকেলম্-নারিকেল ফল (হরীতকী, আমলকী, দ্রাক্ষা প্রভৃতি ফলবাচক শব্দ এবং জাতী, জবা, মালতী প্রভৃতি পুষ্পবাচক শব্দ হলেও স্ত্রীলিঙ্গ হয়) প্রভৃতি। কিন্তু বৃক্ষ অর্থে পুংলিঙ্গ হয়, যথা-আম্রঃ-আমগাছ, পনসঃ-কাঁঠাল গাছ, নারিকেলঃ-নারিকেল গাছ।
(১০) ক্রিয়াব্যয়োর্বিশেষণম্- ক্রিয়ার বিশেষণ এবং অব্যয়ের বিশেষণ ক্লীবলিঙ্গ ও একবচনান্ত হয়, যথা-ক্রিয়ার বিশেষণ- বালকঃ দ্রুতং গচ্ছতি। স শনৈঃ শনৈঃ লিখতি ইত্যাদি। অব্যয়ের বিশেষণ-মনোহরং প্রাতঃ, রমণীয়ং সন্ধ্যা প্রভৃতি।
(১১) অব্যয়ীভাব সমাসে নিষ্পন্ন শব্দ ক্লীবলিঙ্গ, যথা-প্রতিদিনম্, যথাশক্তি, যথেচ্ছম্, যথাসাধ্যম্, যথাজ্ঞানম্, উপগঙ্গম্, আকণ্ঠম্, নির্বিঘ্নম্, অধিতটম্, অনুরূপম্ ইত্যাদি।
(১২) সমাহার-দ্বন্দ্ব সমাস নিষ্পন্ন পদসকল ক্লীবলিঙ্গ ও একবচনান্ত হয়, যথা- অহিনকুলম্, পাণিচরণম্, বধূবরম্ ইত্যাদি।
No comments:
Post a Comment